প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার --- সম্পাদকীয় ডেস্কের প্রতিবেদন
প্রীতিলতা ওয়েদ্দদার, জন্ম ৫ই মে ১৯১১ এবং মৃত্যু ২৪ সেপ্টম্বর ১৯৩২।
প্রীতিলতার ডাকনাম রানী ছদ্ম নাম ফুলতারা। জন্ম চট্টগ্রামের ধলঘাটের পটিয়াতে জন্ম। পটিয়াতে মামা বাড়িতে মানুষ হন। ভাইবোন সব মিলিয়ে ছয় জন। মধুসূদন, প্রীতিলতা, কনকলতা, শান্তিলতা, আশালতা এবং সন্তোষ। বাবা জগদ্বন্ধু ওয়েদ্দাদার মা প্রতিভা দেবী। স্কুল জীবন চট্টগ্রামের ডা. খাস্তগির সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে। স্কুলের দিদি ঊষা দী রাণী লক্ষীবাঈ সম্পর্কে পড়াতেন। ছোটবেলা থেকে দেশের কথা, বাঘা যতীন, ক্ষুদিরাম, কানাইলাল সম্পর্কে বই পড়তেন আর স্বদেশ চেতনায় উদ্ভুধ হতেন। স্কুলে কল্পনা দত্ত ছিলেন অন্যতম বান্ধবী। পরে কল্পনা বিপ্লবী হন। আই এ পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম হন। মাসিক ২০ টাকা বৃত্তি পান। ঢাকায় শ্রীসংঘ, দীপালী সংঘ নামে মহিলা সঙ্গে যোগদান করেন। কলেজ জীবন শুরু করেন কলকাতার বেথুন কলেজে। আন্দোলনে যুক্ত থাকায় ব্রিটিশ বিরোধিতা করায় স্নাতক পাশ করলেও পরীক্ষার ফল আটকে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মাষ্টারদার কাছ থেকেই তাঁর রাজনৈতিক দীক্ষা। ১৯৩০ সালে যখন অস্ত্রাগার লুণ্ঠন হয় তখন বয়স মাত্র ২০। সূর্যসেন, গণেশ ঘোষ, লোকনাথ বল, অম্বিকা চক্রবর্তী, আনন্দ প্রসাদ গুপ্ত, ত্রিপুরা সেন, বিনোদ বিহারী চৌধুরি, সুবোধ রায়,মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য দের সঙ্গে প্রীতিলতা চট্টগ্রামে অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করেন। টেলিফোন, টেলিগ্রাম সংযোগ মাধ্যম পুরোপুরি ধ্বংস করে দেন। পাহাড়তলি ইউরোপিয়ান ক্লাবের বাইরে স্পষ্ট ভাষায় লেখা থাকত ‘ডগস এন্ড ইণ্ডিয়ান্স আর নট অ্যালাউড’। ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ১০ জনের একটি দল ইওরোপিয়ান ক্লাবে হামলা করলে গুলির লড়াইতে কয়েকজন আহত হন। প্রীতিলতা গুলির আঘাতে ঘায়েল হন। মাত্র ২১ বছরে যুদ্ধ করে পটাশিয়াম নাইট্রেট খেয়ে প্রাণ বিসর্জন দেন। মাষ্টার দা সূর্য সেনের ভাবনায় দীক্ষা পান প্রীতিলতা দেবী। অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে বিশেষ নেত্রী ছিলেন এই মহিলা বিপ্লবী। তাঁর পড়াশুনার ক্ষেত্র কলকাতা থেকে চট্টগ্রামের মাঝে এক বিরাট দেশ বিভাজনের প্রাচীর। আজ মনে হয় প্রীতিলতার এই স্বাধীনতার সংগ্রামের মধ্যে কি চট্টগ্রামের সংগ্রামে ভারতবর্ষের অখণ্ড স্বাধীনতার সংগ্রামের কণ্ঠস্বর ছিল না ? হ্যাঁ অবশ্যই ছিল কিন্তু ধর্মের নামে দ্বিজাতি তত্ত্ব মুসলিমলীগের কূট রাজনীতির শিকার হয়েছে প্রীতিলতার স্বপ্ন।

Comments
Post a Comment